SPworld >> Daily News.
ক্লিনিকের বিল পরিশোধের টাকা দিতে না পারায় শিশুটিকে নিয়ে যায় প্রতিবেশীরা। সরকার থেকে প্রশাসনের লোকজন বাচ্চাকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেয়া মায়ের কোলে।
আঙ্গুরী বেগম
গাইবান্ধা সদরের ঘাগোয়া ইউনিয়নের শোলাগাড়ী গ্রামের রাস্তার পাশে স্বামী শাহজাহান আর সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন আঙ্গুরী বেগম। পা-ফেলার মতো এক খণ্ড জমিও নেই তাদের। ভূমিহীন স্বামী শাহজাহানসহ সন্তানদের নিয়ে রাত কাটান মায়ের ঘরে। হাত না চললে তো পেট চলে না।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রসব বেদনায় কাতরাতে থাকেন আঙ্গুরী বেগম। হাজারো চেষ্টা করেও সন্তান প্রসবে ব্যর্থ হলে তাকে নেয়া হয় গাইবান্ধা শহরের যমুনা ক্লিনিকে। দুনিয়াতে আসেন ফুটফুটে ছেলে সন্তান। কিন্তু বিপত্তি আসে ক্লিনিকের বিল পরিশোধের সময় বিল পরিশোধের মত টাকা নেই তাদের।
নিরুপায় হতদরিদ্র পরিবারকে এ সময় প্রতিবেশী জাফর, অলিউল ও হারুন সন্তান বিক্রির পরামর্শ দেয়। তাদের কথায় সম্মতি দিলে সাদুল্লাপুরের এক পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা নেয় প্রতিবেশী তিনজন। তবে মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা আঙ্গুরীর হাতে দিয়ে চারদিন বয়সী নবজাতককে নিয়ে যায় তারা।
নবজাতকের বাবা-মা জানান, ত্রিশ হাজার টাকা পেলেও সেখান থেকে যমুনা ক্লিনিক বিল পরিশোধে চলে যায় সতেরো হাজার টাকা।
তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিন্ন কথা।গাইবান্ধা যমুনা ক্লিনিকের মালিক ফরিদুল হক সোহেল বলেন, পরীক্ষা নিরীক্ষার টাকাসহ ১০ হাজার টাকা দিয়েই তারা এখান থেকে বাচ্চাসহ সুন্দরভাবে চলে যেতে পারতো। তারা কি অবস্থায় কার সঙ্গে কি কথাবার্তা বলেছে সেটা আমি জানি না।
হৃদয়বিদারক ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেন স্থানীয় কলেজ শিক্ষক কামরুল হাসান মিন্টু। স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এলে সাদুল্লাপুর থেকে নবজাতকটি উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক।
কিন্তু বুকের ধন বুকে ফিরে পাবার দশ মিনিট পর আবারো শিশুটিকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী জাফর, অলিউল ও হারুন। ঘটনাটি আবারো সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন কলেজ শিক্ষক মিন্টু। এতে বারোদিন পর আবারো সাদুল্লাপুর থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।
এ ঘটনায়, জড়িত হারুন ও জাফরকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। যাদের হাতে নবজাতকটিকে তুলে দেয়া হয়েছিলো তাদের নাম ঠিকানা জানে না শিশুটির বাবা-মা।
এদিকে, ৩ জানুয়ারি শাহজাহানের পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য তাদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে একটি ভ্যান ও খাদ্য সামগ্রী উপহার দেন জেলা প্রশাসক।
সোহেল রানা।
0 Comments